[Following article is collected]
আমি Anik Devnath। মন চাইলে ৫ টা মিনিট সময় নিয়ে কথাগুলো শুনবেন, না শুনলেও খুব একটা ক্ষতি নেই।
আমার নামটা শুনেই হয়তো আপনাদের কারো কারো (সবার না) মাথায় দুটি জিনিস ঢুকে গেছে:
দেখুন, আমাদের দেশর ৯০% মানুষ মুসলিম। আমার বন্ধু-বান্ধব ও সুহৃদদের ক্ষেত্রেও অনুপাতটা একই রকম। আমার বিপদে-আপদে এগিয়ে আসে আমার এই নিকট মুসলিম মানুষগুলোই, আমি নিজেও অন্যের বিপদের সময় ‘হিন্দু-মুসলিম’ হিসেব না করেই এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি; আমার ভালোবাসা আর শ্রদ্ধা তাদের জন্যই। আর হ্যাঁ, আওয়ামীলীগ সরকার আমাকে ১০ টাকা কেজি চালও দেয় নি অথবা বিশ্বজিৎ দাসের হত্যাকারীদের বিচারও এখনো ঠিকঠাকমতো করে নি। তাই, আপনি যদি মনে করেন, আওয়ামীলীগ আমার জন্মগত রাজনৈতিক বাপ-মা, সেটাও ভুল হবে। তাই, আমার কোনো কথা বিবেচনা করার সময় একটা নিউট্রাল পজিশনে থেকেই বিবেচনা করবেন।
গত ৫ ফেব্রুয়ারী বিকেলে কাদের মোল্লার যাবজ্জীবনের রায়ের প্রতিবাদে যখন সাধারণ মানুষরা রাস্তায় নামে, তখন কিন্তু কোনো আওয়ামীলীগ-জামাত ইস্যু ছিলো না, ছিলো না কোনো আস্তিক-নাস্তিক ইস্যু। কেবলমাত্র রাজাকারদের ফাঁসির দাবীতে অবস্থান নেয়া লোকগুলোর মধ্যেও ৯০% মুসলিমই ছিলো; রাজাকারদের ফাঁসির দাবীতে নামার নাটক করে মূলত ধর্মকে অবমাননা করার উদ্দেশ্য নিয়ে যে কথাটি আজ উঠাচ্ছে একটি মহল, তা নিতান্তই অমূলক এবং হাস্যকর। মূল দাবীর জায়গা থেকে ফোকাসটা সরিয়ে নিতে শাহবাগকে ঘিরে ‘গাঁজার আসর, নারী-পুরুষের বেলাল্লাপনা, ধর্মকে অবমাননা, নাস্তিকদের প্রোপাগান্ডা’ ইত্যাদি অমূলক এবং অবান্তর কথাগুলো ছড়ানোর মূল উদ্দেশ্যই ছিলো সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিটাকে কাজে লাগিয়ে মূল দাবী ‘রাজাকারদের ফাঁসি’ থেকে ফোকাসটা সরিয়ে নেয়া। না, রাজাকারদের সাঙ্গপাঙ্গরা সেই উদ্দেশ্য পুরোপুরি হাসিল করতে পারে নি মোটেই, তবে কিছুটা পেরেছে বটে! শাহবাগের আন্দোলনটাকে একদিনও চাক্ষুস করে নি, এমন প্রত্যেকটি মানুষ কিন্তু তাদের মিথ্যা-বানোয়াট প্রচারেই নাক গলাচ্ছে!
অপপ্রচার চালতে গিয়ে মানুষকে কি পরিমাণ বিভ্রান্ত করছে, তা দেখে বিস্মিত হতে হয়। ভাবতে অবাক লাগে, যে দেশের ৯০% মানুষ মুসলিম এবং বাকী ১০% মানুষ অন্যান্য ধর্মাবলম্বী, তাদের মাঝে ‘নাস্তিক’ কয়জন? অথচ, আজ এমনও প্রচার করা হচ্ছে যে, দেশ নাকি এখন দুইভাগে বিভক্ত- ধর্মপ্রাণ মুসলিম এবং নাস্তিক। আবার এটাও বলা হচ্ছে যে, শাহবাগ ইস্যুর পক্ষে যারা কথা বলছেন, তারা নাকি আসলে ধর্মের বিপক্ষে কথা বলছেন এবং আদতে তারাও নাকি নাস্তিক! কি হাস্যকর একটা ইস্যু বানানো হলো, আর সেই ফাঁদে সবাই পা দিচ্ছে এক এক করে! কোথায় এতো নাস্তিক? কোথায়? দেশের নাস্তিক জনগোষ্ঠীর কি এতোই প্রভাব? তাহলে যে মুক্তিযোদ্ধা গত শুক্রবার নামাজ শেষ করেই শাহবাগের মহাসমাবেশে যোগ দিলেন, তার পরিচয় কি? মিরপুর সরকারী বাংলা কলেজের যে হিন্দু শিক্ষিকা তার আগের শুক্রবার এসেছিলেন সেখানে, তার পরিচয় কি? তারা কি অধার্মিক? নাকি তাদেরকে আওয়ামীলীগ সরকার টাকা দিয়ে সেখানে পাঠাচ্ছে?
আপনি বা আমি, কেউই কিন্তু ফিডারের দুধ খাওয়া শিশু নই। ন্যূনতম বিচারবুদ্ধি কিন্তু সবারই আছে। একটু ভাবুন তো, শাহবাগের আন্দোলনের সাথে সুর মিলিয়ে এই যে আজ সারাদেশের কোটি কোটি মানুষ নতুন করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উন্মাতাল, এরা কি ধার্মিক নয়? রাজাকারদের ফাঁসির দাবীর সাথে এই যে আজ ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের ধর্মীয় চেতনাকে ব্যবহার করে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, কাজটা আসলে কাদের? আমাদের দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষদের অনুভূতিকে আঘাত করে কেউ কি আদতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাচ্ছে? শাহবাগে যারা ফুল সাজিয়ে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করে অভিনব অহিংস প্রতিবাদ জানাচ্ছে, তাদের এই অহিংস প্রতিবাদের ধরণকে যখন ‘ফুল আর আগুন দিয়ে অগ্নিপূজা’ বলা হচ্ছে, তখন কি সেটা সত্যিকারের মুসলিম এবং হিন্দু, উভয়েরই ধর্মানুভূতিতে আঘাত করে না?
জানি না, বেশী বলে ফেললাম কি না। শেষে দুটো কথা কথা বলা দরকার: ১) এটা ভাবা ভুল যে, যাদের মূল দাবী হচ্ছে ‘রাজাকারদের ফাঁসি’, তারা সবাই সরকার বা আওয়ামীলীগের দুধকলা দিয়ে পোষা অবুঝ মানুষের দল। সত্যিকারের বাংলাদেশীদের একটা নিজস্ব চেতনা আছে। ‘যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবী’ অথবা ‘জয় বাংলা স্লোগান’- কোনোটাই আওয়ামীলীগের প্যাটেন্ট করা সম্পত্তি না। এইদেশের সাধারণ মানুষ বিশাল ম্যান্ডেট দিয়ে এই সরকারকে ক্ষমতায় পাঠিয়েছিলো যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবীতে। সেই দাবীর বাস্তবায়নে একটু নড়চড় হয়েছে বলে যারা রাস্তায় নেমে এসেছে, তারা ওই সাধারণ মানুষগুলোই; তারা আওয়ামীলীগের পা-চাটা জনগোষ্ঠী না; ২) যুদ্ধাপরাদীদের ফাঁসির দাবী মূলত নাস্তিকদের আন্দোলন এবং একমাত্র জামাত-শিবির সমর্থকরাই সত্যিকারের মুসলিম- এইরকম অমূলক দাবীর সাথে যারা তাল মিলাচ্ছেন, মনে রাখবেন, আখেরে হয়তো নিজের ধর্মটাকেই ছোট করছেন। সত্যিকারের মুসলিম কখনো রাজাকার বা তাদের দোসর হতে পারে না।
মনে রাখবেন, দেশের জাতীয় পতাকা ছিঁড়ে ফেলা মানুষেরা বা ভাষাশহীদদের স্মৃতিতে তৈরী করা শহীদ মিনারে হামলাকারীরা সত্যিকারের দেশদ্রোহী। আর দেশদ্রোহীরা কখনো ধার্মিক হতে পারে না। আসুন, যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর চেষ্টায় ধর্মব্যবসায়ীদের তৈরী করা ফাঁদে পা না দিই আমরা।
সত্যের জয় হোক, ধর্মের হোক, জয় হোক মুক্তিযুদ্ধের চেতনার......
আমি Anik Devnath। মন চাইলে ৫ টা মিনিট সময় নিয়ে কথাগুলো শুনবেন, না শুনলেও খুব একটা ক্ষতি নেই।
আমার নামটা শুনেই হয়তো আপনাদের কারো কারো (সবার না) মাথায় দুটি জিনিস ঢুকে গেছে:
- এই ছেলেটা যেহেতু হিন্দু, সেহেতু ও ইসলামকে কতটুকুই বা জানে এবং মুসলিমদের কতটুকুই বা সম্মান দিবে;
- এই ছেলেটা যেহেতু হিন্দু, সেহেতু ও একজন সিলমারা আওয়ামীলীগের দালাল এবং ঘুরেফিরে সবসময় আওয়ামী প্রোপাগান্ডার কথাই বলবে।
দেখুন, আমাদের দেশর ৯০% মানুষ মুসলিম। আমার বন্ধু-বান্ধব ও সুহৃদদের ক্ষেত্রেও অনুপাতটা একই রকম। আমার বিপদে-আপদে এগিয়ে আসে আমার এই নিকট মুসলিম মানুষগুলোই, আমি নিজেও অন্যের বিপদের সময় ‘হিন্দু-মুসলিম’ হিসেব না করেই এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি; আমার ভালোবাসা আর শ্রদ্ধা তাদের জন্যই। আর হ্যাঁ, আওয়ামীলীগ সরকার আমাকে ১০ টাকা কেজি চালও দেয় নি অথবা বিশ্বজিৎ দাসের হত্যাকারীদের বিচারও এখনো ঠিকঠাকমতো করে নি। তাই, আপনি যদি মনে করেন, আওয়ামীলীগ আমার জন্মগত রাজনৈতিক বাপ-মা, সেটাও ভুল হবে। তাই, আমার কোনো কথা বিবেচনা করার সময় একটা নিউট্রাল পজিশনে থেকেই বিবেচনা করবেন।
গত ৫ ফেব্রুয়ারী বিকেলে কাদের মোল্লার যাবজ্জীবনের রায়ের প্রতিবাদে যখন সাধারণ মানুষরা রাস্তায় নামে, তখন কিন্তু কোনো আওয়ামীলীগ-জামাত ইস্যু ছিলো না, ছিলো না কোনো আস্তিক-নাস্তিক ইস্যু। কেবলমাত্র রাজাকারদের ফাঁসির দাবীতে অবস্থান নেয়া লোকগুলোর মধ্যেও ৯০% মুসলিমই ছিলো; রাজাকারদের ফাঁসির দাবীতে নামার নাটক করে মূলত ধর্মকে অবমাননা করার উদ্দেশ্য নিয়ে যে কথাটি আজ উঠাচ্ছে একটি মহল, তা নিতান্তই অমূলক এবং হাস্যকর। মূল দাবীর জায়গা থেকে ফোকাসটা সরিয়ে নিতে শাহবাগকে ঘিরে ‘গাঁজার আসর, নারী-পুরুষের বেলাল্লাপনা, ধর্মকে অবমাননা, নাস্তিকদের প্রোপাগান্ডা’ ইত্যাদি অমূলক এবং অবান্তর কথাগুলো ছড়ানোর মূল উদ্দেশ্যই ছিলো সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিটাকে কাজে লাগিয়ে মূল দাবী ‘রাজাকারদের ফাঁসি’ থেকে ফোকাসটা সরিয়ে নেয়া। না, রাজাকারদের সাঙ্গপাঙ্গরা সেই উদ্দেশ্য পুরোপুরি হাসিল করতে পারে নি মোটেই, তবে কিছুটা পেরেছে বটে! শাহবাগের আন্দোলনটাকে একদিনও চাক্ষুস করে নি, এমন প্রত্যেকটি মানুষ কিন্তু তাদের মিথ্যা-বানোয়াট প্রচারেই নাক গলাচ্ছে!
অপপ্রচার চালতে গিয়ে মানুষকে কি পরিমাণ বিভ্রান্ত করছে, তা দেখে বিস্মিত হতে হয়। ভাবতে অবাক লাগে, যে দেশের ৯০% মানুষ মুসলিম এবং বাকী ১০% মানুষ অন্যান্য ধর্মাবলম্বী, তাদের মাঝে ‘নাস্তিক’ কয়জন? অথচ, আজ এমনও প্রচার করা হচ্ছে যে, দেশ নাকি এখন দুইভাগে বিভক্ত- ধর্মপ্রাণ মুসলিম এবং নাস্তিক। আবার এটাও বলা হচ্ছে যে, শাহবাগ ইস্যুর পক্ষে যারা কথা বলছেন, তারা নাকি আসলে ধর্মের বিপক্ষে কথা বলছেন এবং আদতে তারাও নাকি নাস্তিক! কি হাস্যকর একটা ইস্যু বানানো হলো, আর সেই ফাঁদে সবাই পা দিচ্ছে এক এক করে! কোথায় এতো নাস্তিক? কোথায়? দেশের নাস্তিক জনগোষ্ঠীর কি এতোই প্রভাব? তাহলে যে মুক্তিযোদ্ধা গত শুক্রবার নামাজ শেষ করেই শাহবাগের মহাসমাবেশে যোগ দিলেন, তার পরিচয় কি? মিরপুর সরকারী বাংলা কলেজের যে হিন্দু শিক্ষিকা তার আগের শুক্রবার এসেছিলেন সেখানে, তার পরিচয় কি? তারা কি অধার্মিক? নাকি তাদেরকে আওয়ামীলীগ সরকার টাকা দিয়ে সেখানে পাঠাচ্ছে?
আপনি বা আমি, কেউই কিন্তু ফিডারের দুধ খাওয়া শিশু নই। ন্যূনতম বিচারবুদ্ধি কিন্তু সবারই আছে। একটু ভাবুন তো, শাহবাগের আন্দোলনের সাথে সুর মিলিয়ে এই যে আজ সারাদেশের কোটি কোটি মানুষ নতুন করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উন্মাতাল, এরা কি ধার্মিক নয়? রাজাকারদের ফাঁসির দাবীর সাথে এই যে আজ ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের ধর্মীয় চেতনাকে ব্যবহার করে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, কাজটা আসলে কাদের? আমাদের দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষদের অনুভূতিকে আঘাত করে কেউ কি আদতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাচ্ছে? শাহবাগে যারা ফুল সাজিয়ে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করে অভিনব অহিংস প্রতিবাদ জানাচ্ছে, তাদের এই অহিংস প্রতিবাদের ধরণকে যখন ‘ফুল আর আগুন দিয়ে অগ্নিপূজা’ বলা হচ্ছে, তখন কি সেটা সত্যিকারের মুসলিম এবং হিন্দু, উভয়েরই ধর্মানুভূতিতে আঘাত করে না?
জানি না, বেশী বলে ফেললাম কি না। শেষে দুটো কথা কথা বলা দরকার: ১) এটা ভাবা ভুল যে, যাদের মূল দাবী হচ্ছে ‘রাজাকারদের ফাঁসি’, তারা সবাই সরকার বা আওয়ামীলীগের দুধকলা দিয়ে পোষা অবুঝ মানুষের দল। সত্যিকারের বাংলাদেশীদের একটা নিজস্ব চেতনা আছে। ‘যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবী’ অথবা ‘জয় বাংলা স্লোগান’- কোনোটাই আওয়ামীলীগের প্যাটেন্ট করা সম্পত্তি না। এইদেশের সাধারণ মানুষ বিশাল ম্যান্ডেট দিয়ে এই সরকারকে ক্ষমতায় পাঠিয়েছিলো যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবীতে। সেই দাবীর বাস্তবায়নে একটু নড়চড় হয়েছে বলে যারা রাস্তায় নেমে এসেছে, তারা ওই সাধারণ মানুষগুলোই; তারা আওয়ামীলীগের পা-চাটা জনগোষ্ঠী না; ২) যুদ্ধাপরাদীদের ফাঁসির দাবী মূলত নাস্তিকদের আন্দোলন এবং একমাত্র জামাত-শিবির সমর্থকরাই সত্যিকারের মুসলিম- এইরকম অমূলক দাবীর সাথে যারা তাল মিলাচ্ছেন, মনে রাখবেন, আখেরে হয়তো নিজের ধর্মটাকেই ছোট করছেন। সত্যিকারের মুসলিম কখনো রাজাকার বা তাদের দোসর হতে পারে না।
মনে রাখবেন, দেশের জাতীয় পতাকা ছিঁড়ে ফেলা মানুষেরা বা ভাষাশহীদদের স্মৃতিতে তৈরী করা শহীদ মিনারে হামলাকারীরা সত্যিকারের দেশদ্রোহী। আর দেশদ্রোহীরা কখনো ধার্মিক হতে পারে না। আসুন, যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর চেষ্টায় ধর্মব্যবসায়ীদের তৈরী করা ফাঁদে পা না দিই আমরা।
সত্যের জয় হোক, ধর্মের হোক, জয় হোক মুক্তিযুদ্ধের চেতনার......
No comments:
Post a Comment