এখন আর আমাকে নিয়ে আফসোস করি না. এখন আর পাওয়া না পাওয়ার হিসাব করি না. এখন আর হারানো যৌবনের জন্য ভাবি না. এখন আর মধ্যরাত্রি দূস্বপ্নে ঘুম ভেঙে গেল একা একা কাঁদি না. এখন আর ২৪ বছরে ব্যর্থ প্রবাস জীবনের জন্য কাউকে দোষ দেই না.এখন আর ৪৫ডিগ্রী রোদের কাজ করার সময় একটু ছায়া খুঁজি না.জীবনের সমস্ত কষ্টগুলোকে আরবের মরুভুমিতে কবর দিয়েছি .তাই এখন আর আমার জীবনের কোন সুখের বা বেঁচে থাকার তাগিদা নেই. যতদিন বাঁচবে প্রবাসে বাঁচবে, যদি মরণ হয়ে যেন প্রবাসে হয়.এই জীবনটাই যাদের জন্য বিলিয়ে দিলাম প্রবাসে আজ তাঁরাই আমার সবচেয়ে বড় শত্রু. যাদের সুখের জন্য প্রবাসে কাটিয়ে দিলাম ২যুগ তাঁরাই বলছে যোগ্যতার নেই বলে আমি আজ দুখি.
আজ থেকে অনেকদিন আগে বাবার সাথে যখন জমিতে ধান বুনতে বুনতে বাবাকে বলেছিলাম আমাকে বিদেশে পাঠান. আমি বিদেশ গিয়ে আপনের কষ্ট দূর করে দেব. আর অভাবে সাথে যুদ্ধ করতে হবে না. আমি ছিলাম বাবার প্রথম সন্তান তাই বাবার সাথে সব কাজ করতে হত আমাকে. আমারা ছিলাম ৩ভাই ৩বোন. যখন স্কুলের সময় সবাই স্কুলে যেত আর আমি যেতাম ক্ষেতে কাজ করতে. তবে এখন আর সেইদিন নেই ছোট ২ভাই দেশে ভাল চাকরি করে. বউ সন্তান নিয়ে নিজের ফ্লাট নিয়ে শহরে থাকে. ছোট ৩বোন চাকরি করে আর শ্বশুর বাড়িতে স্বামী সন্তান নিয়ে অনেক সুখে আছে. ওদের আর অভাবের সাথে যুদ্ধ করতে হয় না.আমার প্রবাস জীবনের প্রথম ১৫বছরের সব টাকা ওদের পড়ালেখা জন্য খরচ করছি. কখনো ওদের আমার কষ্টগুলো বুঝতে দেইনি. যখন যা চাইছে দিয়েছি. আর এখন মনে হয় এটাই ছিল আমার সবচেয়ে বড় ভুল. এই ভুল প্রতিটি প্রবাসী করে.
আমি প্রথম ১০বছর পর বাড়ি গিয়ে বিয়ে করলাম. আমাদের বাড়িটা খুব ছোট ও একটা ঘর ছিল আমাদের. এতগুলো মানুষ একটা ঘর. যদিও বাবা বলতে ঘর তুলার জন্য. আমি বলতাম ওদের পড়ালেখা শেষ হোক তারপর ঘর তুলবো. তাই আমি বাড়ি গিয়ে ছোট্ট একটা ঘর তুললাম দুচালে. বিয়ে কয়েক মাস অনেক সুখে কাটালাম. বউয়ের আদর সোহাগ পেয়ে ভুলে গেলাম ১০প্রবাস জীবনের কষ্ট গুলোকে. আসলে পুরুষের জীবনের সতি্যকারের স্বাদটা বিয়ে পরে আসে. সুখের দিন গুলো কখন যে ফুরিয়ে দেল বুঝতে পারলাম. ৬মাসের ছুটির শেষে বাবা হবো খবর পেয়েও সাথে করে ৩লক্ষ টাকা ঋন করে আবার চলে আসলাম সৌদিতে.প্রবাসীদের সবচেয়ে বড় কষ্ট হলো ছুটি শেষে আবার প্রবাসে আসা.এই কষ্টটা শুধু প্রবাসীরাই বুঝতে পারে.প্রবাস জীবনের না পাওয়া ও হিসাব মিলাতে মিলাতে কেটে গেল অনেকগুলো বছর.
এখন আমার ২৪বছর প্রবাস জীবনে আর আমার বয়স ৫৬. এখন আমার সংসারে অনেক বড় হয়ে গেছে ৩মেয়ে ও ১ছেলে. ছেলেটা সবার ছোট. অনেকদিন ধরে ভাবছি দেশে চলে যাবো. এখন আমার কাছে ১০লক্ষ টাকা আছে . মেয়েগুলো বিয়ে সময় হয়ে যাচ্ছে. এই টাকাগুলো মেয়েদের বিয়ে দিতে খরচ হয়ে যাবে. তাহলে ছেলেটার ভবিষৎ কি? এই নিয়ে প্রতিদিন বউয়ের সাথে ঝগরা. অনেক ভেবে দেখলাম বউয়ের কথাগুলোই সতি্য, যে টাকা আছে ভাল পরিবারে মেয়ে বিয়ে দিতে গেল সব টাকা শেষ তাহলে ছেলের ভবিষৎ. আর এদিকে আমি ও বয়সের ভারে কালান্ত.
আজ থেকে অনেকদিন আগে বাবার সাথে যখন জমিতে ধান বুনতে বুনতে বাবাকে বলেছিলাম আমাকে বিদেশে পাঠান. আমি বিদেশ গিয়ে আপনের কষ্ট দূর করে দেব. আর অভাবে সাথে যুদ্ধ করতে হবে না. আমি ছিলাম বাবার প্রথম সন্তান তাই বাবার সাথে সব কাজ করতে হত আমাকে. আমারা ছিলাম ৩ভাই ৩বোন. যখন স্কুলের সময় সবাই স্কুলে যেত আর আমি যেতাম ক্ষেতে কাজ করতে. তবে এখন আর সেইদিন নেই ছোট ২ভাই দেশে ভাল চাকরি করে. বউ সন্তান নিয়ে নিজের ফ্লাট নিয়ে শহরে থাকে. ছোট ৩বোন চাকরি করে আর শ্বশুর বাড়িতে স্বামী সন্তান নিয়ে অনেক সুখে আছে. ওদের আর অভাবের সাথে যুদ্ধ করতে হয় না.আমার প্রবাস জীবনের প্রথম ১৫বছরের সব টাকা ওদের পড়ালেখা জন্য খরচ করছি. কখনো ওদের আমার কষ্টগুলো বুঝতে দেইনি. যখন যা চাইছে দিয়েছি. আর এখন মনে হয় এটাই ছিল আমার সবচেয়ে বড় ভুল. এই ভুল প্রতিটি প্রবাসী করে.
আমি প্রথম ১০বছর পর বাড়ি গিয়ে বিয়ে করলাম. আমাদের বাড়িটা খুব ছোট ও একটা ঘর ছিল আমাদের. এতগুলো মানুষ একটা ঘর. যদিও বাবা বলতে ঘর তুলার জন্য. আমি বলতাম ওদের পড়ালেখা শেষ হোক তারপর ঘর তুলবো. তাই আমি বাড়ি গিয়ে ছোট্ট একটা ঘর তুললাম দুচালে. বিয়ে কয়েক মাস অনেক সুখে কাটালাম. বউয়ের আদর সোহাগ পেয়ে ভুলে গেলাম ১০প্রবাস জীবনের কষ্ট গুলোকে. আসলে পুরুষের জীবনের সতি্যকারের স্বাদটা বিয়ে পরে আসে. সুখের দিন গুলো কখন যে ফুরিয়ে দেল বুঝতে পারলাম. ৬মাসের ছুটির শেষে বাবা হবো খবর পেয়েও সাথে করে ৩লক্ষ টাকা ঋন করে আবার চলে আসলাম সৌদিতে.প্রবাসীদের সবচেয়ে বড় কষ্ট হলো ছুটি শেষে আবার প্রবাসে আসা.এই কষ্টটা শুধু প্রবাসীরাই বুঝতে পারে.প্রবাস জীবনের না পাওয়া ও হিসাব মিলাতে মিলাতে কেটে গেল অনেকগুলো বছর.
এখন আমার ২৪বছর প্রবাস জীবনে আর আমার বয়স ৫৬. এখন আমার সংসারে অনেক বড় হয়ে গেছে ৩মেয়ে ও ১ছেলে. ছেলেটা সবার ছোট. অনেকদিন ধরে ভাবছি দেশে চলে যাবো. এখন আমার কাছে ১০লক্ষ টাকা আছে . মেয়েগুলো বিয়ে সময় হয়ে যাচ্ছে. এই টাকাগুলো মেয়েদের বিয়ে দিতে খরচ হয়ে যাবে. তাহলে ছেলেটার ভবিষৎ কি? এই নিয়ে প্রতিদিন বউয়ের সাথে ঝগরা. অনেক ভেবে দেখলাম বউয়ের কথাগুলোই সতি্য, যে টাকা আছে ভাল পরিবারে মেয়ে বিয়ে দিতে গেল সব টাকা শেষ তাহলে ছেলের ভবিষৎ. আর এদিকে আমি ও বয়সের ভারে কালান্ত.
- আমাদের বাড়িটা ছিল ১৫শতাংশ ও বিলে কিছু জয়গা আছে. ২ভাইয়ের ৪ছেলে ও আমার এক ছেলে ভবিষৎ ঘর তুলার জয়গা থাকবে না, আবার বোনের অংশ আছে.
- বউ প্রায় বলতে আপনে তো ভাইবোনের জন্য অনেক কিছু করলেন ও তারা বাড়িতে থাকে না. বাবাকে বলেন আমাদের ছেলে জন্য ৩বোনের জয়গার অংশ লিখে দিতে. বউ বললো আপনের ২ভাই ঢাকা বাসায় নিয়ে ছেলে মেয়ে নিয়ে তো অনেক সুখে আছে ও আপনের বোনেরা নিজ সংসার নিয়ে অনেক সুখে আছে ওদের তো কোন কিছু অভাব নেই. আপনের কাছে কিছু টাকা আছে আর বিলের একটু জয়গা বেঁচে সেই টাকাগুলো দিয়ে মেয়েদের বিয়ে দিয়ে ও একটা সিএনজি কিনে চালাবেন এত আমরা সুখে থাকতে পারবো হয়তো আপনের ভাইবোনদের মত বিলাসীতা থাকবে না. ছেলেটার জন্য বাড়িটা তো আছে. বউয়ের কথাগুলো এক মাস ভাবে দেখলাম সতি্য বলছে.
- একদিন বাবাকে বললাম বউয়ের সেই কথাগুলো .কথাগুলো শুনে বাবা রেগে গেলেন অনেক গালাগালি করলেন. আর বললেন ওনি বেঁচে থাকতে কাউকে জায়গা দিবে না. ও বিক্রি করতে দেবে না. আর হাজারটা প্রশ্ন আমার এত বছরের টাকা কি করলাম সব টাকা নাকি শ্বশুরবাড়িতে দিয়েছি.
- বাবার একটা কথায় অনেক কষ্ট পাইছি আমার ভাইবোনেরা তাদের যুগ্যতায় আজকে নাকি সফল ও সুখে আছে. আমি নাকি গন্ড মূর্খ তাই আমার কপালে এত কষ্ট.আর ওনার ছেলে মেয়েদের এক সুতা অংশ আমাকে টাকা বাদে দিবে না যদি টাকা দেই তাহলে ভাইবোনেরা দিবে.
- এই নিয়ে আমার বউয়ের সাথে প্রতিদিনই অনেক ঝগরা হয়. আমি বাবাকে বলেছিলাম আজ আমার ভাই বোনের সফল হত না যদি আমি টাকা না দিতাম. ওদের ক্ষেতে চাষ করে খেতে হত. এর পর বাবা বললো আমি জানি তোর কষ্ট . আমি তোর ভাইবোনদের জিজ্ঞাসা করবো যদি দেয় তাহলে তোকে লিখে দেবো নয়তো পারবো না.কারন তুই আমার সন্তান ওরা আমার সন্তান .যত থাকুক ওদের সম্পদ. কিছুদিন পর বাবা বললো ওরা টাকা ছাড়া জায়গা দেবে না.
- আমি আর বাবাকে কিছু বলি নাই. আমি বাবাকে দোষ দেই না কারন তার কাঁছে সবাই সমান. তবে পরে জানতে পারছি বাবা নাকি আমাকে জায়গা দিতে চেয়ে ছিলো. ভাইবোনদের প্ররোচনার কারনে দিতে পারে নাই. বাবাকে বলছে আমি বিদেশ থাকি যদি আমার বউ দেখেশুনা না করে তখন বাবার নাকি কষ্ট হবে.
- যাহা হোক আর আমিও জায়গা চাইতাম না যদি ভাইয়েরা গ্রামের বাড়ি থাকতো. তবে মা চেয়েছিলো আমি যেন জায়গাটা পাই. এরপর গ্রামের বিচার সালিশে জয়গার দাম ধরা হলো ১২লক্ষ টাকা. কি করবো অনেক ভেবে চিন্তা করে রাজি হলাম.
বার বার শুধু মনে পরছে কেন আমি আমার জন্য কিছু করলাম না. আজ বেইমান স্বার্থপর হয়ে গেলাম যদি আজ থেকে ১৫ বছরের আগে বেঈমান ও স্বার্থপর হতাম তাহলে আজকে এই বুড়া বয়সে কেদে কেদে প্রবাসে কাটাতে হত না. এখন তো ভাইবোন বাবা সবাই সুখে আছে. এখন আমার পরিবারের কেউ ডাকও দেয় না. তখন খুবই কষ্টে লাগে যখন শুনি ওদের ব্যবহারের কথা.
যাহা হোক প্রবাস জীবনের গল্প কখনো শেষ হবে না কারন আমরা প্রবাসে কখনো কঠিন ও বেঈমান স্বার্থপর হতে পারবো না. যে সমস্ত প্রবাসী ভাইয়েরা গল্পটি পড়বেন তাদের কয়েকটা কথা বলি.
- নিজের জন্য কিছু টাকা জমাবেন. নয়তো প্রবাস জীবন কখনো শেষ হবে না. আমার হয়তো কপাল খারাপ ভাইবোনদের বুঝাতে পারিনি.
- এই পৃথিবীতে কেউ কারো নয় স্বার্থ ছারা. আজ যদি আমার ভাইবোন আমাকে একটু সহয়তা করতে তাহলে এখন বাড়ি যে কোন রকম খেয়ে কাটিয়ে দিতাম.
- তবে সবার ভাগ্য এক নয়. আপনের ভাই হয়তো অনেক ভালো, আপনের ভাল চাইবে কিন্তু ভাইয়ের বউ কখনো চাইবে না. তেমনি বোন চাইলে বোনের স্বামী চাইবে না.
- এই পৃথিবীতে নিজের সন্তান চেয়ে কেউ আপন হয় না. আমি যেমন বাবার কাছে আপন ,তেমনি আবার ভাইয়ের কাছে ভাইয়ের সন্তান. আবার আমার কাছে আমার সন্তান. এখন ভাইয়েরা আমার চেয়ে নিজের সন্তানকে নিয়ে ভাববে ও সন্তানের ভবিষৎ চিন্তা করবে এটা আমাদের সমাজের নিয়ম.
এই গল্পটি সৌদিআরবের প্রবাসীর জীবন থেকে নেওয়া ও skype তে শুনে লেখা।
[Collected]
No comments:
Post a Comment